Comments

বাংলাদেশের সকল অর্জন

 বাংলাদেশের সকল অর্জন


বাংলাদেশের অর্জন

 

অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ ঘটেছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) গত ১৫ মার্চ এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক এ তিনটি সূচকের যে কোন দুটি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকের মানদন্ডেই উন্নীত হয়েছে।

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইকোসক) মানদন্ড অনুযায়ী এক্ষেত্রে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তার থেকে অনেক বেশি অর্থাৎ ১৬১০ মার্কিন ডলার। মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৭২ দমমিক ৯। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক হতে হবে ৩২ ভাগ বা এর কম যেখানে বাংলাদেশের রয়েছে ২৪ দশমিক ৮ ভাগ।

‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ - যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস’ সরকারের রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের এটি একটি বড় অর্জন। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাহসী এবং অগ্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কাঠামোগত রূপান্তর ও উল্লেখযোগ্য সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় উঠে আসে জন্মের ৫০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মতো সফলতা দেখাতে যাচ্ছে। উঠে আসে জাতির পিতা কীভাবে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার জন্য একতাবদ্ধ করেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ থেকে কীভাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানীমূখী শিল্পায়ন, ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রপ্তানী আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহ। এতে প্রদর্শন করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদাত্ত আহ্বান, ‘আসুন দলমত নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

সূত্রঃ  বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

 

বাংলাদেশের অর্জন

ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে তার ভূমিকা, জনবহুল দেশে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুতা আনয়ন, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৪৩ বছরের অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের করা মন্তব্য এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেবার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার ও জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম।

 

শিক্ষাখাতে অর্জন
শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেবার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো- শতভাগ ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ কার্যক্রম। নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নেবার জন্য প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চালু করা হয়েছে উপবৃত্তি ব্যবস্থা। বর্তমান ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুন করে জাতীয়করণ করেছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ করা হয়েছে। ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশুর শতকরা হার ছিল ৬১, বর্তমানে তা উন্নীত হয়েছে শতকরা ৯৭.৭ ভাগে। শিক্ষার সুবিধাবঞ্চিত গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে, গঠন করা হয়েছে "শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট”।

সূত্রঃ  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

 

স্বাস্থ্যসেবায় সাফল্য

শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ দেশ হিসেবে তার স্থান করে নিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতকে যুগোপযোগী করতে প্রণয়ন করা হয়েছে “জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা-২০১১”। তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৯টি(১) কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩১২টি(২) উপজেলা হাসপাতালকে উন্নীত করা হয়েছে ৫০ শয্যায়। মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপতালগুলোতে ২ হাজার শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ১৯৯০ সালে নবজাতক মৃত্যুর হার ১৪৯ থেকে নেমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫৩তে(৩)। স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ১২টি(৪) মেডিকেল কলেজ, নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৪৭ হাজারেও বেশি জনশক্তি।

 সূত্রঃ  , ,

 

নারী ও শিশু উন্নয়নে অর্জন
নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১”। নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চালু করা হয়েছে উপবৃত্তি কার্যক্রম। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করতে গৃহীত হয়েছে নানামুখী পদক্ষেপ। প্রযুক্তি জগতে নারীদের প্রবেশকে সহজ করতে ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্রের মতো ইউনিয়ন ভিত্তিক তথ্যসেবায় উদ্যোক্তা হিসেবে একজন পুরুষের পাশাপাশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একজন নারী উদ্যোক্তাকেও। “জাতীয় শিশু নীতি-২০১১” প্রণয়নের মাধ্যমে সুরক্ষিত করা হয়েছে শিশুদের সার্বিক অধিকারকে। দেশের ৪০টি জেলার সদর হাসপাতাল এবং ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল। দুঃস্থ্, এতিম, অসহায় পথ-শিশুদের সার্বিক বিকাশের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের নারী ও শিশুর উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভূষিত করা হয়েছে জাতিসংঘের সাউথ–সাউথ এওয়ার্ডে।

 

সূত্রঃ মাল্টি সেক্টরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্স এগেইনস্ট ওমেন

 

 

নারীর ক্ষমতায়নে অর্জন
নারী বঞ্চনার তিক্ত অতীত পেরিয়ে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেকদূর এগিয়েছে। পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ। আর এই শিল্পের সিংহভাগ কর্মী হচ্ছে নারী। ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশে গ্রামীণ উন্নয়নে ও নারীর ক্ষমতায়নে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে। আর ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ৮০% এর উপর নারী। বাংলাদেশ সরকার নানাভাবে নারী উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে এসেছে।

 

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবতায় রূপ দিতে বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ। দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবা পৌঁছে দেবার অভিপ্রায়ে দেশের ৪৫৫০টি ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপন করা হয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিশাল ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল। কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এ পোর্টালের সংখ্যা প্রায় ২৫০০০। দেশের সবক’টি উপজেলাকে আনা হয়েছে ইন্টারনেটের আওতায়।  টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১২ কোটি  ৩৭ লক্ষ(১) এবং ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৬ লক্ষে(২) উন্নীত হয়েছে। সেবা প্রদান প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করতে চালু করা হয়েছে ই-পেমেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিং। সরকারী ক্রয় প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পাদন করার বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে। ৩-জি প্রযুক্তির মোবাইল নেটওয়ার্কের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

 সূত্রঃ 

 

কৃষিতে কৃতিত্ব এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন

কৃষিখাতে অভূতপূর্ব কিছু সাফল্যের জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ বারবার আলোচিত হয়েছে।প্রায় ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. মাকসুদুল আলম আবিষ্কার করেছেন পাটের জিনোম সিকুয়েন্সিং। সারা বিশ্বে আজ পর্যন্ত মাত্র ১৭ টি উদ্ভিদের জিনোম সিকুয়েন্সিং হয়েছে, তার মধ্যে ড. মাকসুদ  করেছেন ৩টা। তাঁর এই অনন্য অর্জন বাংলাদেশের মানুষকে করেছে গর্বিত।

 

প্রবাসী শ্রমিকদের উন্নয়নে অর্জন
বর্তমানে বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশের ৮৬ লক্ষেরও অধিক শ্রমিক কর্মরত আছে। বিদেশে শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ স্থাপন করেছে অনন্য দৃষ্টান্ত। স্বল্প সুদে অভিবাসন ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন করে দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে এর শাখা স্থাপন করা হয়েছে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে এপ্রিল ২০১৪ পর্যন্ত ২০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অভিবাসন ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায় থেকে বিদেশ গমনেচ্ছু জনগণকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণকেও এ সেবা গ্রহণের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে হয়রানি ছাড়াই স্বল্প ব্যয়ে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোতে শ্রমিকগণ যেতে পেরেছে।

 

জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যোগদানের পর এ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৯টি দেশের ৬৪ শান্তি মিশনে খ্যাতি ও সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ যাবৎকালে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ১১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বাগ্রে।

 

বিদ্যুৎখাতে সাফল্য
বিদ্যুৎখাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত ৬ হাজার ৩২৩ মেগাওয়াট(১) বিদ্যুৎ সংযোজন, যার ফলে বিদ্যুতের সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৪৭ শতাংশ থেকে ৬২ শতাংশে(২) উন্নীত হয়েছে। একই সাথে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২২০ কিলোওয়াট ঘণ্টা থেকে বেড়ে ৩৪৮ কিলোওয়াট(৩) ঘণ্টায় দাঁড়িয়েছে। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে ৩৫ লক্ষ গ্রাহককে।নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ৬৫টি(৪) বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

 সূত্রঃ ,,

 

 

শিল্প ও বাণিজ্য খাতে অর্জন
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্রসার ঘটেছে আবাসন, জাহাজ, ঔষুধ, ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য শিল্পের। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যোগ হয়েছে জাহাজ, ঔষুধ এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী। বাংলাদেশের আইটি শিল্প বহির্বিশ্বে অভূতপূর্ব সুনাম কুড়িয়েছে। সম্প্রতি ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের আইটি শিল্প ১০ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় ছাড়িয়ে গেছে।

 

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশের অর্জন
হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বিস্তৃত করতে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃকালীন ভাতাসহ ভাতার হার ও আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৮-২০০৯ সালে এই খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা, বর্তমানে এ কার্যক্রমে বরাদ্দের পরিমাণ ২৫ হাজার ৩৭১ কোটি(১) টাকা। খানা আয়-ব্যয় জরিপ, ২০১০ এর সমীক্ষায় দেখা গেছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৪.৫% সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতাভুক্ত হয়েছে।

 সূত্রঃ 

 

ভূমি ব্যবস্থাপনায় অর্জন
ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করতে ৫৫টি জেলায় বিদ্যমান মৌজা ম্যাপ ও খতিয়ান কম্পিউটারাইজেশনের কাজ সম্পন্ন করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ভূমির পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে মোট ২১টি জেলার ১৫২টি উপজেলায় ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রণীত হয়েছে “কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন, ২০১২ এর খসড়া”।

 

মন্দা মোকাবেলায় সাফল্য
মন্দার প্রকোপে বৈশ্বিক অর্থনীতি যখন বিপর্যস্ত ছিল বাংলাদেশ তখন বিভিন্ন উপযু্ক্ত প্রণোদনা প্যাকেজ ও নীতি সহায়তার মাধ্যমে মন্দা মোকাবেলায় সক্ষমই শুধু হয়নি, জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ শতাংশের বেশি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথ ধারার বিপরীতে আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ। ঋণ পরিশোধে সক্ষমতার মানদণ্ডে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের সমকক্ষতা অর্জিত হয়েছে।

সূত্রঃ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক


ডিজিটাল বাংলাদেশ


মন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, "২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে।“, এই পরিকল্পনাটির মূল লক্ষ্য ছিল, একটি উন্নত দেশ, সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উৎপাদনব্যবস্থা, নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি - সর্বোপরি একটি জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক দেশ গঠন করা। ‘বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’ ২০০৯ সালের ১২ থেকে ১৭ নভেম্বর, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ সামিট’ নামক বিষয়ে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে, যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো আলোচিত হয়। আর এর পর থেকেই এ ব্যাপারে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচি গৃহীত হতে থাকে।

অগ্রযাত্রা ও অর্জন

  • জুন ২০১৯ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৯৭৫ কি.মি. অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন, ২ হাজার ৪ টি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ওয়াইফাই রাউটার স্থাপন এবং ১ হাজার ৪৮৩ টি ইউনিয়নকে নেটওয়ার্ক মনিটরিং সিস্টেমে সংযুক্ত করা হয়েছে।
  • বর্তমানে ওয়েবসাইট বা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও দিকনির্দেশনা সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ওয়েব পোর্টাল হলো www.bangladesh.gov.bd।
  • সরকারি সেবা ও তথ্য বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দেশে তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়টি সরকারি মোবাইল হেল্পডেস্ক। এই মোবাইল হেল্পডেস্কগুলোর নির্দিষ্ট নম্বরে কল করার মাধ্যমে মানুষ সহজেই সরকারি তথ্য ও সেবা পাচ্ছে। এই সবগুলো নম্বর টোল ফ্রি সেবার আওতায়। বর্তমানে বাংলাদেশে এমন বেশ কয়টি সরকারি হটলাইন নম্বর রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিষয় হটলাইন
সরকারি তথ্য ও সেবা ৩৩৩
জরুরি সেবা (পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এ্যাম্বুলেন্স) ৯৯৯
শিশু ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ১০৯
দুদক ১০৬
দুর্যোগের আগাম বার্তা ১০৯০
ভূমি সেবা হটলাইন ১৬১২২
জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য ১০৫
শিশুর সহায়তা ১০৯৮
কৃষক বন্ধু ফোন সেবা ৩৩৩১
কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩
মহিলা সংস্থা বা তথ্য আপা ১০৯২২
  • বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। ফলে সরকারি কোনো বিশেষ ঘোষণা মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে সরাসরি ঐ সকল ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের নিকট পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
  • বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকরা অনলাইনে আবেদন করে দেশের ৬৪টি জেলায় স্থাপিত ই-সেবা কেন্দ্র থেকে জমি-জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারে।
  • চিনিকলের ইক্ষু সরবরাহের অনুমতিপত্র বা পুর্জি স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে এবং কৃষকরা বর্তমানে মোবাইলে তাদের পুর্জি পাচ্ছে।
  • বাংলাদেশে অনলাইন বেচাকেনা ও ই-বাণিজ্য ধারণার ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ই-কমার্স সাইট।
  • সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ই-বই প্ল্যাটফরম তৈরি হয়েছে। এতে ৩০০টি পাঠ্যপুস্তক ও ১০০টি সহায়ক পুস্তক রয়েছে।
  • শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক ইন্টারনেট সংযোগের ফলে বর্তমানে দেশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফরম। যেমন 'রবি ১০ মিনিট স্কুল','১০ মিনিট স্কুল'
  • নাগরিকদের নিকট স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন স্থানে ‘টেলিমেডিসিন সেবাকেন্দ্র’ গড়ে তুলেছে। সরকারি হাসপাতালসমূহের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে যেকোনো তথ্য বা অভিযোগ মোবাইল ফোনে অথবা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
  • বাড়িতে বসেই এখন আয়করদাতারা আয়করের হিসাব করতে পারেন এবং রিটার্ন তৈরি ও দাখিল করতে পারেন।
  • পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং, ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম ইত্যাদির মাধ্যমে বর্তমানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণ তুলনামূলক সহজ ও দ্রুততর হয়েছে। ইন্টারনেট ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও টাকা স্থানান্তরিত করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হলো- বিকাশ, রকেট, টি-ক্যাশ, নগদ, সিটি টাচ, উপায়, ইজি ক্যাশ।
  • বর্তমানে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ, পানিগ্যাস বিল অনলাইনে অথবা মোবাইল ফোনে পরিশোধ করতে পারেন।
  • সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ; স্কুল, কলেজবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন; পরীক্ষার নিবন্ধন; চাকরির আবেদন; জন্ম নিবন্ধন; ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
  • বর্তমানে প্রায় সকল ট্রেন, বাসপ্লেনের টিকিট অনলাইনে বা মোবাইলে সংগ্রহ করা যায়।
  • সরকারের বড় বড় উন্নয়নমূলক কাজে টেন্ডার নিয়োগের জন্য বর্তমানে ‘ই-টেন্ডার’ নামক বিশেষ ওয়েব পোর্টাল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে এসকল কাজে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দুর্নীতি হ্রাস পেয়েছে।
  • ২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে প্রেরণ করা হয় বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’
  • বিশ্বের ৯ম দেশ হিসেবে পরীক্ষামূলক ভাবে 5G ইন্টারনেট চালু হয় ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর।
  • ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বাংলাদেশের ২য় কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু ২ তৈরী ও মহাকাশে উৎক্ষেপনের জন্য রুশ প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমস (Glavkosmos) এর সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিঃ (BSCL).
  • দেশের প্রথম বাংলা ভাষাভিত্তিক ব্রাউজার 'দুরন্ত' যাত্রা শুরু করে ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ২০২১।
  • ১ ডিসেম্বর ২০২০ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল SEA-ME-WE-6 স্থাপনের প্রকল্প অনুমতি দেয় মন্ত্রি সভা।
  • সারাদেশে উন্নত ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ এবং বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ বর্তমানে দুইটি সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত, যথাঃ SEA-ME-WE-4 ও SEA-ME-WE-5।
  • ইন্টারনেটে বাংলায় তথ্য অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা তৈরি করেছিল দেশের প্রথম নিজস্ব বাংলা ওয়েব অনুসন্ধান ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ (বর্তমানে বন্ধ)
  • সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা তৈরি করেছেন ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন’ বা ইভিএম।
  • এস্তোনিয়াভিত্তিক ‘ই-গভর্নেন্স একাডেমি ফাউন্ডেশন’-এর করা জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সূচকে বিশ্বের ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৮তম, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ১ম। (২৪/০৮/২০২১ তারিখে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত)

বাংলাদেশের সকল অর্জন  বাংলাদেশের সকল অর্জন Reviewed by SJ WiKi on November 28, 2022 Rating: 5

No comments

Recent Posts

Recent in Recipes

3/Food/post-list